জগন্নাথের স্নানযাত্রা:
হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীজগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা পালিত হয়। জগন্নাথের ভক্তদের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই দিনটিকে জগন্নাথের জন্মতিথি বলে মনে করা হয়। পুরীতে স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে স্নান করানো হয়। এই দৃশ্য চাক্ষুস করতে এদিন পুরীতে ভিড় করেছেন বহু মানুষ।
জগন্নাথের ভক্তদের বিশ্বাস, স্নানযাত্রার দিন যদি জগন্নাথদেবকে দর্শন করা যায় তাহলে সকল পাপ থেকে মুক্তি মেলা সম্ভব। এই জন্য অসংখ্য ভক্ত স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে পুরীর মন্দির দর্শনে যান। স্কন্দপুরাণম্-এ বলা হয়েছে, পুরীর মন্দিরে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার পরেই প্রথম বার রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। স্নানযাত্রার আগের দিন জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রা, সুদর্শন চক্র ও মদনমোহনের বিগ্রহের একটি বিশাল শোভাযাত্রা মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বার করে স্নানবেদীতে এনে রাখা হয়। ভক্তেরা এই সময় জগন্নাথকে দর্শন করতে আসেন।
স্নানযাত্রার দিন মন্দিরের উত্তর দিকের কূপ থেকে জল এনে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে তার শুদ্ধিকরণ করা হয়। তারপর ১০৮টি কলসীর জলে বিগ্রহগুলিকে স্নান করানো হয়। প্রচলিত বিশ্বাস, এই স্নানের পরেই জ্বরে কাবু হয়ে পড়েন জগন্নাথ। এই সময় তাঁকে রাজবৈদ্যের চিকিৎসাধীনে গোপনে একটি সংরক্ষিত কক্ষে রাখা হয়। এই অসুস্থতার পর্যায়টি 'অনসর' নামে পরিচিত। এই সময় ভক্তেরা দেবতার দর্শন পান না।
তাঁদের দর্শনের জন্য বিগ্রহের পরিবর্তে মূল মন্দিরে তিনটি পটচিত্র রাখা হয়। এই সময় ভক্তেরা ব্রহ্মগিরিতে অলরনাথ মন্দিরে যান। তাঁরা বিশ্বাস করেন, অনসর পর্যায়ে জগন্নাথ অলরনাথ রূপে অবস্থান করেন। কথিত আছে, রাজবৈদ্যের আয়ুর্বৈদিক 'পাঁচন' খেয়ে এক পক্ষকালের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। সুস্থ হয়ে উঠে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা রাজবেশে সজ্জিত হয়ে রথযাত্রা করে মাসির বাড়ি যান।
ছবি- অমর্ত্য ঘোষ
তথ্য - সুত্র ওপুরাণ
প্রভুর স্নানযাত্রায় আনন্দে মেতেছেন ভক্তগণ
হরিনাম সংকীর্তনের মধ্য দিয়ে জল আনতে যাওয়ার প্রস্তুতি
পুণ্যস্নান
গঙ্গা থেকে জল তুলে প্রভুর মন্দিরের উদ্দেশ্যে যাত্রা
মন্দিরে ফিরে আসা
প্রভুকে স্নান করানোর পূর্বে দুধ, মধু, ঘি প্রভৃতি দিয়ে স্নান করানো ।
শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের পুণ্যস্নান
জয় জগন্নাথ
পরবর্তী সিরিজ - রথযাত্রা
Comentários